মাহে রমজান এলো বছর ঘুরে মুমিন মুসলমানের দ্বারে দ্বারে এই গানটি আমরা হয়তো সকলেই কমবেশি শুনে এসেছি। প্রকৃত মুমিনদের কাছে এই মাসটি হল সবথেকে আনন্দের মাস। কারণ এই মাসের ৩০ টি দিনই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই মাসের প্রথম ১০ দিন থাকে রহমতের অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালা রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন তার বান্দাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন।
দ্বিতীয় দশদিন থাকে মাগফিরাত। আর এই দশ দিন আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন। আর তৃতীয় দশ দিন থাকে নাজাতের। আর এই দশ দিন আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে কবরের আজাব থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে। আর এজন্যই মুসলিমদের কাছে রমজান মাস সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস।যার প্রকৃত মুসলমান তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে এই মাসটির জন্য।
আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদেরকে সামান্য কিছু সময়ের উপবাসের বিনিময়ে বড় বড় উপহার দিয়ে থাকে। যে কারণে মুমিন ব্যক্তিরা এই মাসটিকে সাদরে গ্রহণ করে। আর অনেক মানুষই আছে যারা এই মাসটির আনন্দ কি তা বোঝানোর জন্য একটি গান বা গজল তৈরি করে ফেলেছি যার মাধ্যমে তারা তাদের মনের আবেগকে বোঝাতে চেয়েছি। বোঝাতে চেয়েছে যে তারা এই মাসটিকে কতটুকু আনন্দের সাথে গ্রহণ করেছি।
এখানে যা যা পাবেন
মাহে রমজান এর সংগীত
“মাহে রমজান এলো বছর ঘুরে
মুমিন মুসলমানের দ্বারে দ্বারে
রহমতের বাণী নিয়ে
মাগফিরাতের বার্তা নিয়ে
আবার ফিরে এল আমাদের মাঝে
মাহে রমজান এর বার্তা নিয়ে
মুমিন মুসলিমের এর দারে দারে
গুনাহ মাফের পয়াগাম নিয়ে
পাপি তাপিদের সুযোগ দিতে
আবার এল মাহে রমজান
মুমিন মুসলিমের এর দারে দারে
মাহে রমজান এলো বছর ঘুরে
মুমিন মুসলমানের দ্বারে দ্বারে”
মাহে রমজান
প্রত্যেক ন মুমিন মুসলিমদের কাছে রমজান মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। কারণ এই মাস বছরের সবথেকে পবিত্র একটি মাস। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা তার অশেষ রহমত বান্দাদের ওপর বর্ষণ করে এবং আল্লাহ তায়ালা এই মাসে তার বান্দাদের রিজিক বাড়িয়ে দেয়। শয়তানের ধোঁকা থেকে দূরে রাখে। রমজান মাসের একটি রোজা পালন করলে যেসব পাওয়া যায় সেই সওয়াব পেতে হলে সারা বছর ৬০ টি রোজা করতে হবে।
বছরের সবথেকে পবিত্র মাস রমজান হওয়ার মূল কারণ হলো এই মাসে মহান আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের হেদায়েতের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ কিতাব আল কোরআন নাজিল করেছেন। এই মাসে আল্লাহর রহমতের এবং জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়। এই মাস এমন একটি মাস যেই মাসে কবর এবং জাহান্নামের শাস্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
রমজান অর্থ কি
রমজান হল ফারসি শব্দ যার অর্থ প্রচণ্ড উত্তপ্ত, তীব্রতা, জ্বর, তাপ ইত্যাদি। রমজান অর্থ পর্যন্ত উত্তপ্ত বলা হয়েছে এর মূল কারণ হলো এই মাসে রোজাদারদের অন্তর ক্ষুধা পিপাসায় জ্বলতে থাকে। আল্লাহতালা মূলত এই মাসে তার বান্দাদের ধৈর্য পরীক্ষা করে। এই ধৈর্য পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হতে পারেন আল্লাহতালা তাদের জন্য রেখে দেয় কিছু আকর্ষণীয় উপহার। এমন হতে পারে আল্লাহ তাআলা তার বান্দার উপর খুশি হয়ে তার সারা জীবনের সকল গুনাহ মাফ করে দিবেন।
যার ফলস্বরূপ সে জান্নাত লাভ করবে। জান্নাত লাভের উপর আর বড় কিছু উপহার কিছুই হতে পারে না। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত রমজান মাস থেকে সম্মান করা এবং সাদরে গ্রহণ করা। এ মাসি বান্দাদের জন্য একমাত্র সুযোগ আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন করা।
আল্লাহ প্রদত্ত রমজান মাসের কিছু নিয়ামত
আল্লাহ তাআলা এ মাসে তার বান্দাদের জন্য অশেষ নিয়ামত প্রদান করে থাকে। যেগুলো আমরা হাজার চাইলেও বছরের বাকি সময়গুলোতে পাইনা। যেমন- এ সময় আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য রিযিকের পরিমাণ তিনগুণ বাড়িয়ে দেয়, এই মাসের একটি ফরজ আদায় করলে পাওয়া যায় সারা বছর ৭০ টি ফরজ আদায় করলে সেই পরিমাণ সওয়াব পাওয়া যায়।
আল্লাহ তাআলা এই মাসে সকল নিয়ামত দিয়ে বান্দাকে ভরিয়ে দেয়। এ সময় সকল প্রকার কাজে এবাদতে আল্লাহর নিয়ামতে পূর্ণ থাকে। যার কারণে যে কাজ করা হয় সেই কাজে সফলতা আসে। ব্যবসা থেকে শুরু করে সকল কাজে বেশি রুজি আয় করা যায়। এক কথায় বলতে গেলে রমজান মাস পুরোটাই একটি নেয়ামত পূর্ণ মাস।
রমজান মাসের কিছু আমল
আমরা প্রথমেই জানি যে রমজান মাস একটি পবিত্র মাস। এ মাসে আল্লাহ তায়ালার এবাদত বন্দেগী বেশি বেশি করতে হয়। কারণ রমজান মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টিতে একটি নেকি পাওয়া মানে অন্যান্য সময়ের 700 নেকি পাওয়ার সমান। আর তাই আমি আজকে মুসলিম ভাই ও বোনদের জন্য রমজান মাসের কিছু আমল বলে দেব। যাতে তারা এই আমলগুলো পালন করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে।
১। রমজান মাসের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ আমল হল কোরআন তেলাওয়াত করা। কারণ আমরা জানি যে কোরআন তেলাওয়াত আমরা যদি না বুঝেও করি তবু সওয়াব পাওয়া যায়, শুধু তাই নয় কুরআনের প্রতিটি হরফের জন্য নেকি বরাদ্দ থাকে, আপনি যদি কোরআন তেলাওয়াত করতে নাও পারেন শুধু অন্যের কোরআন তেলাওয়াত শুনেন তবু আপনার আমলনামায নেকি লেখা হবে। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন রমজান মাসে কোরআন তেলাওয়াত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
২। এছাড়াও আপনি আপনার দান সদকার হাত বড় করতে পারেন। অর্থাৎ এ মাসে আপনি বেশি বেশি দান সদকা করে গরিবদের সাহায্য করতে পারেন। এটিও রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
৩। আপনি ফরজ সালাতের পাশাপাশি নফল ইবাদত করতে পারেন।
৪। নিজের চরিত্রকে আদর্শ চরিত্রে পরিণত করতে পারেন, এটিও আপনার এবাদতের অন্তর্ভুক্ত। চরিত্র গঠন করার মাধ্যমেও আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন, সুতরাং এক কথায় বলা যায় আদর্শ চরিত্র গঠন করা একটি আমল।
৫। আপনি অমুসলিমদের দ্বীনের দাওয়াত দিতে পারেন এটি এবাদতের অন্তর্ভুক্ত।
Read More