আসসালামুয়ালাইকুম প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা। আশা করি মহান রাব্বুল আলামিনের রহমতে আপনারা সকলেই ভাল আছেন। রমজান উপলক্ষে আপনাদের প্রতি রইল অগ্রিম রমজানের শুভেচ্ছা। রমজান মাসকে লক্ষ করে আজকের এই পোষ্টটি তৈরি করা। আপনাদের মাঝে অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগে রোজা কাদের জন্য ফরজ আর কাদের জন্য নয়।
তো আমরা এই সকল বিষয় উপলব্ধি করে আপনাদের জন্য আজকের এই কনটেন্টটি তৈরি করেছি। তাহলে চলুন দেরী না করে চলে যাওয়া যাক আজকের মূল বিষয়বস্তুর উপর।
এখানে যা যা পাবেন
যাদের উপর রোজা রাখা ফরজ নয়
ইসলাম এমন একটি ধর্ম যেখানে কোনো কিছু তার ওপর জোর করে চাপিয়ে দেয়না। মহান রাব্বুল আলামিন যেমনটি রোজা রাখতে বলেছেন, ঠিক তেমনি বিভিন্ন সমস্যার জন্য রোজা রাখা অব্যাহত সম্পর্কে জানিয়েছেন। নিজে আমরা উল্লেখ করলাম সেই সকল ব্যক্তিদের সম্পর্কে যাদের উপর রোজা রাখা ফরজ নয়।
১। অমুসলিমঃ অবশ্যই রোজা অমুসলিমদের জন্য ফরয নয়। রোজা শুধুমাত্র মুসলমানদের উপরেই ফরজ।
২। দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতাঃ যদি কোন ব্যক্তির দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা থেকে থাকে যা ভালো হওয়ার আশঙ্কায় একেবারেই কম এবং রোজা রাখার গত অবস্থান একেবারেই না থাকে তবে তার জন্য রোজা রাখা ফরজ না। এক্ষেত্রে তার প্রতিটি রোজার পরিবর্তে একজন করে মিসকিনকে খানা খাওয়াতে হবে। যদি প্রতিটি রোজার জন্য একজন করে মিসকিন খাওয়ানো হয় তবে তার জন্য কাযা আদায় করা হয়ে যাবে।
৩। সফরঃ সফরে থাকা অবস্থায় রমজান মাস এসে পড়লে বা রমজান মাসের সফর করলে ওই ব্যক্তির ওপর রোজা না রাখা উত্তম। তবে সফরের জন্য দূরত্ব মোতাবেক নির্দেশনায় অভ্যন্তরীণ হলে তবেই তার জন্য রোজা না রাখা উত্তম হবে। সফরের দূরত্ব কমপক্ষে ৮০ কিলোমিটার হতে হবে । ৮০ কিলোমিটার হলে তবেই সেই ব্যক্তিটি মুসাফির বলে গণ্য হবে। কোন মুসাফির যদি নির্দিষ্ট স্থানে ৪ দিনের বেশি থাকা নিয়োগ করে থাকে তবে সে মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে না। আর তখন তাকে তার রোজা আদায় করতে হবে।
কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি কোন কাজের জন্য বাহিরে গেলেন এবং তিনি জানেন না আসতে কত দিন সময় লাগবে তো সেক্ষেত্রে তার জন্য রোজা রাখা প্রয়োজন হবেনা। আরেকটি বিষয় রোজার দিন মুসাফির যদি বাড়ি ফিরে আসেন তাহলে রোজার বাকি অংশটুকুতে না খেয়ে রোজা করতে হবে। তবে অবশ্যই একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে ক্ষণিকের প্রয়োজনীয়তার জন্য রোজা রাখার বিধান বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে না করায় রোজাগুলো অবশ্যই কাযা করে নিতে হবে।
কাদের উপর রোজা রাখা ফরজ নয়
১। হায়েয বা নেফাযঃ হায়েয বা নেফায চলাকালীন সময়ে রোজা রাখা ফরজ নয়। এসময় কেউ রোজা রাখলে তা সহীহ হবে না। তবে অনেকের মাঝে একটি প্রশ্ন থাকে, যে উক্ত সময়ে নামাজ পড়াটা কি বারণ থাকে। তো প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, উক্ত সময়ে রোজা রাখা ফরজ না হলেও বা বারণ থাকলেও নামাজ পড়া কিন্তু বারণ নয়।
২। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলা: যদি রোজা থাকার জন্য নিজেদের অথবা নিজের সন্তানের ক্ষতি মূলক কাজ হয় তবে আর তার ক্ষেত্রে রোজা রাখা ওয়াজিব হবেনা। তবে যে কয়দিন রোজা রাখতে পারেনি পরবর্তীতে সে কয়দিনে রোজা কাযা আদায় করে নিতে হবে। আর যদি কোন মহিলা নিজের জন্য নয় শুধু সন্তানের ক্ষতি হবে এটি লক্ষ্য করে রোজা থাকা থেকে বিরত থাকে, তবে তাকে অবশ্যই সেই রোজার কাযা আদায় করতে হবে পাশাপাশি প্রতিদিনের জন্য কমপক্ষে একজন করে মিসকিনকে খাওয়াতে হবে।
৩। অসুস্থতাঃ যদি রোজা থাকার মাধ্যমে কোন অসুস্থ ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা আরও বেশি খারাপ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে থাকে কিংবা সুস্থতার বিলম্বিত হতে পারে, তবে সেই ব্যক্তির ওপর রোজা রাখা ফরজ নয়।
যাদের উপর রোজা রাখা ফরজ
আমরা ইতিপূর্বে যাদের উপর রোজা রাখা ফরজ এই বিষয় নিয়ে একটি কন্টেন্ট তৈরি করেছি। যদি আপনাদের মাঝে যাওয়ার প্রবণতা থাকে থাকে যে কাদের উপর রোজা রাখা ফরজ। তবে চাইলে আপনারা নিচে দেওয়া লিংকটিতে ক্লিক করে দেখে আসতে পারেন।
Link: যাদের উপর রোজা রাখা ফরজ
রোজাদারকে ইফতার করালে কি হয়
রমজান হচ্ছে বরকতময় মাস। এই মাসে যে যত পারেন, ততবেশি আমল করবেন। কারণ এ সময়ে সকল আমলের সওয়াব অন্য সকল মাসের চাইতে অত্যাধিক। যদি আপনার উপর রোজা ফরজ না হওয়ার কারণ থেকে থাকে তবে এই রমজান মাসে বেশি বেশি দান-খয়রাত করবেন, পারলে রোজাদারকে ইফতার করাবেন। কোন ব্যক্তি যদি একজন রোজাদারকে ইফতার করান তবে ওই ইফতার করানো ব্যক্তির অপর একটি কবুল রোজার সওয়াব চলে আসে। এইসব কিন্তু রোজাকারী ব্যক্তির থেকে নয় বরং স্বয়ং মহান আল্লাহ নিজেই দিয়ে থাকেন।
সর্বশেষ কথাঃ আশাকরি আমাদের এই পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। পরবর্তীতে এরকম আরো বিভিন্ন ধরনের পোস্ট পেতে অবশ্যই আমাদের কে ফলো করবেন। আপনার মূল্যবান সময় আমাদের পাশে কাটানোর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।