আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ অর্থসহ এবং ফজিলত

কেমন আছেন সকল মুসলমান ভাই ও বোনেরা। আজকে আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চলেছি কুরআনের সবচেয়ে ফজিলত পূর্ণ একটি আয়াত সম্পর্কে। যাকে আমরা বলে থাকি সূরা আয়াতুল কুরসি।

এই সূরাকে কুরআনের সবচেয়ে ফজিলত পূর্ণ একটি আয়াতে বলা হয়েছে। এটি মূলত কোন সূরা নয়। আসলে এটি একটি সূরার আয়াত। যে আয়াতটি পাঠ করা এমন একটি ফজিলত যার মাধ্যমে সারা বিশ্বের উপর আল্লাহ তাআলার ক্ষমতা সম্পর্কে ঘোষণা দেওয়া হয়।

আয়াতুল কুরসি

আয়তোলকুসি হচ্ছে কুরআন শরিফের সবচেয়ে বড় সূরা আল-বাকারা এরপর 255 তম আয়াত। এই সূরাটি এমন একটি সূরা যার মাধ্যমে যেকোনো দুষ্ট জিন কে দূর করার মতো ক্ষমতা রয়েছে এই আয়াতুল কুরসি আয়াতে। তাই অবশ্যই আয়াতুল কুরসি জানা থাকা সকলের জন্য অত্যন্ত জরুরী।

কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যারা ভালো হবে আমি পড়তে পারি না। কিন্তু সকলেরই তো এই আয়াত বা আয়াতুল কুর্সি টি জানা থাকা খুবই জরুরী। এতে করে আপনি অনেক সওয়াব বিপদ থেকে বাঁচতে পারবেন। তাই তাদের সুবিধার জন্য আমরা আপনাদেরকে আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ এর ফজিলত জানাতে চলেছি।

আয়াতুল কুরসি আরবিতে

সকল কিছুর পূর্বে আপনাদেরকে আগে আমরা আয়াতুল কুরসি আরবি যা নিয়ে নিচ্ছি। কারণ আয়াতুল কুরসি ও কোরআন শরীফের আয়াত আরবিতে লেখা হয়ে থাকে। এবং সেই লেখার উচ্চারণই সবচেয়ে ভালো হয়। কিন্তু যারা আরবি পড়তে পারে না তাদের জন্য আমরা বাংলা উচ্চারণ দেখাবো। কিন্তু তার পূর্বে চলুন আগে আরবিতে দেখে নেওয়া যাক।

اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ

وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاواتِ وَالأَرْضَ وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

আয়াতুল কুরসি বাংলা উচ্চারণ

এবার আমরা চলে আসলাম আশঙ্কা থাকে। আপনারা এতক্ষন যার জন্য অপেক্ষা করে আছিলেন সেটাই আমরা আপনাদেরকে দেখাবো। এবার আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরব আয়াতুল কুরসি সেই বাংলা উচ্চারণ। বাংলা উচ্চারণ –

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহু লা-ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল-কাইয়্যুল, লা-তা’ খুযুহু সিনাতু ওয়া-লা নাউম । লাহু মা-ফীস সামাওয়াতি ওয়া-মা ফীল আরদি। মান যাল্লাযী ইয়াশফাউ ইনদাহু ইল্লা-বি-ইযনিহী, ইয়া’লামু মা- বাইনা আইদীহীম ওয়া-মা খলফাহুম, ওয়া-লা ইউহীতূনা বিশাইয়্যিম মিন ইলমিহী ইল্লা বিমা শা-আ। ওয়াসি’আ কুরসীয়্যুহুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ওয়া-লা ইয়াউদুহু হিফজুহুমা ওয়া হুয়াল আলীয়্যুল আযী-ম। (সূরা আল বাকারাহ- ২৫৫ তম আয়াত)

আয়াতুল কুরসি বাংলা অর্থ

আয়াতুল কুরসি সুরাটের অর্থ খুবই বড়োসড়ো একটি অর্থ। এর অর্থ কি কোন ছোট কথার মাধ্যমে বোঝানো সম্ভব না। কারণ এর অর্থ তার মূলভাব বা কথাটি এর আসল বিশ্লেষণ হচ্ছে অনেক বড়। এ অর্থে বোঝানো হয় মহান আল্লাহ তাআলা সারা বিশ্বের একমাত্র ক্ষমতাশালী এবং তিনিই একমাত্র আমাদের ও পালনকর্তা সৃষ্টি কর্তা। এর অর্থ কি নিচে দেওয়া হল –

বাংলা অর্থ: আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, আল্লাহ্‌ জীবিত,তিনি সবকিছুর ধারক। তাকে নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না এবং তন্দ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই কিছুর মালিক তিনি । কে আছো এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই কিছুই আল্লাহ্‌ জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত নভোমন্ডল ভূমন্ডল পরিবেষ্টিত করে আছে। আর এইগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। আল্লাহই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান। ( সূরা আল বাকারাহ- ২৫৫ তম আয়াত)

আয়াতুল কুরসির ফজিলত

আয়াতুল কুরসি এর ফজিলত দুনিয়া ও আখিরাতে অপরিসীম। এর ফজিলত বলে শেষ করা সম্ভব নয়। এর ফজিলত সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (স.) বলেছেন,”যে ব্যক্তি প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়ে, তার মৃত্যু খুবই সহজভাবে হবে।”

আরো একটি বর্ণনায় রয়েছে যে ব্যক্তি প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতের পথে মৃত্যু ব্যতীত আর কোনো বাধা থাকবে না। অর্থাৎ মৃত্যুর পরপরই তার জান্নাতের সুখ-শান্তি ভোগ করতে থাকবে। এছাড়াও যে রাতে আয়াতুল কুরসি পাঠ করে ঘুমায় মহান আল্লাহ তা’আলা তার জন্য একটি ফেরেশতা পাঠান যে তাকে সকল প্রকার খারাপ কাজ থেকে হেফাজত করেন।

হাদীসে পাওয়া গেছে যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে সে, সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত সকল জিন ও শয়তানের প্ররোচনা থেকে হেফাজতে থাকবে। আবার সকালে পাঠ করলে সে, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শয়তান ও দুষ্টু জিনের প্ররোচনা থেকে হেফাজতে থাকবে। আমাদের মহানবী (স.) আরো বলেন,”কোন ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি পাঠ করে তার সম্পদের উপর ফু দিয়ে ঘুমালে তার সম্পদ ক্ষতির হাত থেকে বাঁচবে এবং কোন চোর চুরি করতে পারবে না।” তাই বলা যায় আয়াতুল কুরসির ফজিলত অপরিসীম।

যাদের উপর রোজা রাখা ফরজ

যাদের উপর রোজা রাখা ফরজ নয় 

ইফতারের দোয়া