স্বাধীনতা দিবসের ছোটদের কবিতা , 26 শে মার্চের কবিতা

26 শে মার্চ, এই দিনটি বাঙালিদের কাছে এক স্মরণীয় দিন। কেননা এই দিনে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করি। প্রতিটি জাতির জন্য স্বাধীনতা কত বড় নিয়ামত সকলে জানে। কেননা পরাধীনতার মত কষ্টের কিছু হতে পারে না। আপনি যদি হাজার 1971 সালের দিকে ফিরে যান তাহলে দেখতে পাবেন পরাধীন জীবন কতটা কষ্টের। আপনি যদি পরাধীন হয়ে থাকেন তাহলে অন্যের চাপিয়ে দেওয়া কষ্ট গুলো আপনাকে সহ্য করে থাকতে হবে।

কিন্তু আপনি যদি স্বাধীন একটি রাষ্ট্রে বসবাস করেন তাহলে আপনি আপনার ব্যক্তিস্বাধীনতা পাবেন। আর ব্যক্তিস্বাধীনতার থেকে বড় কিছু হতে পারে না। নিজের ইচ্ছা মত চলার মজাই আলাদা। এর জন্য প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন একটি ব্যক্তি স্বাধীনতা। আর এর জন্য স্বাধীনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকে আমি ছোটদের জন্য নিয়ে এসেছি স্বাধীনতা দিবসের কবিতা। তাই চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আসল কাজে ফিরে আসি।

স্বাধীনতা দিবসের ছোটদের কবিতা

স্বাধীনতা তুমি এসেছিলে অন্ধকারকে দূর করে,

স্বাধীনতা তুমি এসেছিলে আমার ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে,

স্বাধীনতা তুমি শিখিয়েছে প্রতিটি মানুষকে এক হতে,

স্বাধীনতা তুমি আমার অহংকার।

স্বাধীনতা বাংলাদেশকে আলোকিত করতে এসেছিল,

স্বাধীনতা বাংলার মানুষকে অধিকার আদায় করতে শিখেছিল।

স্বাধীনতা সেতো প্রতিটি মানুষের চাওয়া ,

স্বাধীনতা সে তো প্রতিটি মানুষের অহংকার।

26 শে মার্চের কবিতা

তুমি আমার দেশ,

তুমি আমার অহংকার,

তোমায় কি ভুলিতে পারি,

আমার প্রিয় জন্মভূমি।

স্বাধীনতা কবিতা কাজী নজরুল ইসলাম

‘হিন্দু না ওরা মুসলিম?’ ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?/ কান্ডারি বল ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মা’র।’ ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ এ উপলব্ধিকে প্রতিষ্ঠিত করতে কবি নজরুল কবিতায় লেখেন, ‘গাহি সাম্যের গান/ মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।/নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ জাতি,/সব দেশে, সব কালে, ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।’ অথবা বলতে পারি, ‘গাহি সাম্যের গান-/যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান,/যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম-ক্রীশ্চান’-

(সাম্যবাদী কবিতা)। ‘সাম্যবাদী’ কাব্যের বারাঙ্গনা, কুলি-মজুর, মানুষ, রাজা-প্রজা, নারী, পাপ, চোর-ডাকাত প্রভৃতি কবিতায় সাম্যবাদী নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। আর উচ্চারণে ছিল অগ্নিবর্ষা। প্রচলিত ধারণা ও বিশ্বাসে কুঠারাঘাত করেছেন। আলোচ্য কবিতাংশগুলো তার জ্বলজ্বলে প্রমাণ। শোষণ-নিপীড়িত মানুষকে জাগাতে নজরুল লেখেন, ‘এই সব মুঢ় ম্লান মূক মুখে/দিতে হবে ভাষা, এই সব শ্রান্ত শুষ্ক ভগ্ন বুকে/ধ্বনিয়া তুলিতে হবে আশা।’ শাসক-প্রজা বা শোষক-শোষিতের মধ্যকার পর্বতসম ব্যবধান কমাতে কবিতা লিখেছেন তিনি। কবিতার সুরে সবাইকে জাগাতে চেষ্টা করেছেন।

স্বাধীনতা তুমি কবিতা

লিখেছেন শামসুর রহমান

স্বাধীনতা তুমি
রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।
স্বাধীনতা তুমি
কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো
মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-
স্বাধীনতা তুমি
শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা
স্বাধীনতা তুমি
পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।
স্বাধীনতা তুমি
ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি।
স্বাধীনতা তুমি
রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।
স্বাধীনতা তুমি
মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশী।
স্বাধীনতা তুমি
অন্ধকারের খাঁ খাঁ সীমান্তে মুক্তিসেনার চোখের ঝিলিক।
স্বাধীনতা তুমি
বটের ছায়ায় তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর
শানিত কথার ঝলসানি-লাগা সতেজ ভাষণ।
স্বাধীনতা তুমি
চা-খানায় আর মাঠে-ময়দানে ঝোড়ো সংলাপ।
স্বাধীনতা তুমি
কালবোশেখীর দিগন্তজোড়া মত্ত ঝাপটা।
স্বাধীনতা তুমি
শ্রাবণে অকূল মেঘনার বুক
স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।
স্বাধীনতা তুমি
উঠানে ছড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপন।
স্বাধীনতা তুমি
বোনের হাতের নম্র পাতায় মেহেদীর রঙ।
স্বাধীনতা তুমি বন্ধুর হাতে তারার মতন জ্বলজ্বলে এক রাঙা পোস্টার।
স্বাধীনতা তুমি
গৃহিণীর ঘন খোলা কালো চুল,
হাওয়ায় হাওয়ায় বুনো উদ্দাম।
স্বাধীনতা তুমি
খোকার গায়ের রঙিন কোর্তা,
খুকীর অমন তুলতুলে গালে
রৌদ্রের খেলা।
স্বাধীনতা তুমি
বাগানের ঘর, কোকিলের গান,
বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা,
যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।